ডিপ্রেশনের কিছু কথা........

ডিপ্রেসন কথার অর্থ বিষন্নতা। এখন লোক মুখে এই রোগটির কথা প্রায়শই শোনা যায়। কেন হয় রোগ একারনটা আমাদের জানা দরকার। কারন আমার মনে হয় আমরা যদি একটু সময় সচেতন হই একে অপরের প্রতি তাহলে এ রোগ থেকে সহজেই বেড়িয়ে  আসতে পারবে রোগী।
ডিপ্রেসন এমন একটা রোগ যেটি হলে রোগী সবসময় এক নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে মনখারাপের মধ্যে ডুবে থাকে। যখন ইচ্ছা কান্না করে কোন কারণ ছাড়াই আবার কারও সাথে কথা বলতেও ভালবাসে না। অন্ধকার ঘর এবংএকাএকা কথা বলতে ভালবাসে। এই একা একা কথাটা কিন্তু জোরে জোরেই বলে।
সব কারন হয়তো আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয় তবে কিছু কিছু কারন আমি বলতে পারি যেগুলো ডিপ্রেসন হবার জন্য যথেষ্ট।
::জীবনে চলার পথে যদি হঠাৎ করে কোনও পরিবর্তন আসে এবং তা যদি মন থেকে মেনে নিতে না পারা যায় তাহলে ডিপ্রেসন আসতে পারে। যেমন —হঠাৎ করে আয় কমে গেল বা খরচা বেড়ে গেল, চাকরি বা ব্যাবসা বন্ধ হয়ে গেলে বা লস খেতে শুরু করলে।, হয়ত রোগীর কাছে কোনও সম্পর্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল হঠাৎ করে সেখানে বিচ্ছেদ ঘটলে এ রোগ হতে পারে।
::কোন কাছের খুব নির্ভরশীল মানুষ বা রোগীর ভালবাসার মানুষ হয়তো হঠাৎ করেই রোগীকে ছেড়ে চির শান্তির ঘুমে ঘুমিয়ে পড়েছে তখন এ রোগ হতে পারে।

::রোগী হয়তো খুব সেন্সসিটিভ মনের মানুষ। সে যদি শারীরিক ও মানসিক ভাবে অপমানিত বোধ করে নিজের মানুষের কাছ থেকে অর্থাৎ নিজের ভালবাসার মানুষের কাছে যদি গুরুত্ব না পায় তাহলে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
::বাবার ফ্যামিলি বা মায়ের ফ্যামিলি অর্থাৎ বংশগতকারনে এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
::কেউ  যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে বা কারন- অকারণ আলোচনা করতে গিয়ে যদি পরপর নিজের মানুষের বারবার মতবিরোধ হয় বা সম্পর্ক নষ্ট হয় তখনও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
:: দীর্ঘদিন ধরে যদি কোনও রোগে ভুগতে থাকে তাহলে এ রোগ আসতে পারে আবার ওষুধের প্রতিক্রিয়াতেও এ রোগ হতে পারে।
এরকম ছোট বড় অনেক কারন আছে এ রোগের তবে এ রোগ হলে রোগীর সাধারণ জীবন যাপন ব্যাহত হয়।
যেমন —কাজে অনীহা চলে আসে। ভাবে হয়তো কাজটা করবে কিন্তু ইচ্ছা করে না। খাওয়া দাওয়াতে পরিবর্তন হয়। কখনও কখনও খাবেনা আবার কখনও কখনও বেশি খাবে। ঘুম কমে যাবে। অনেক সময়ই ঘুমের ওষুধ খেলেও ঘুম আসবে না। কারো কথা ভালো লাগবে না।  কেউ ভালো কথা বললেও বিরক্ত লাগবে।
সব কিছুতে মনোযোগের অভাব হবে ফলে স্মৃতি শক্তি ঠিক মত কাজ করে না। যে কোনও কাজ করার আগেই হবে না, হবে না ভাবটা আসবে।
আর মাথা যন্ত্রণা বা গ্যাসট্রিকের প্রবলেম বাড়ে এ রোগের ক্ষেত্রে।
এ রোগ থেকে রোগী সম্পূর্ণ রুপেই বেড়িয়ে আসতে পারে। তারজন্য দরকার বাড়ির লোকের একটু যত্ন বা ভালবাসা। যার এ রোগ হয় তাকে একটা নিয়ম মাফিক জীবন যাপন করতে হবে। অর্থাৎ ঠিক সময় অনুযায়ী সব কাজ করতে হবে করবো বললে হবে না
লক্ষ নির্ধারণ করে কাজ করতে হবে। এবং উৎসাহ দিতে হবে বারংবার। তোমার দ্বারা হবে না বা তুমি পারবে না একথা গুলো বলা যাবে না রোগীকে।
নিয়মিত কিছু ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করতে হবে।
হাল্কা ভালো লাগা খাবার খেতে হবে। যেগুলো থেকে বদহজম হবার সম্ভাবনা কম।
নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমোতে পাঠাতে হবে। সে সময় কোনও কথাবার্তা অন্যের বলা চলবে না।
তুমি সেরা, তুমি পারবেই পারবে এধরনের কথা বলে ইতিবাচক দিক আনতে হবে।
যে কাজ করতে ভালো লাগে সে কাজের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতে হবে। অবশ্যই কাজটাকে ভালবেসে করতে হবে।
আর ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলতে হবে।
এ রোগ মানেই অনেকে পাগল বলে থাকেন তা কিন্তু নয়। এরোগ হয় ভালবাসার মানুষের কাছ থেকে অবহেলা, অনাদর, অপমান এবং নেগেটিভ কথা শুনতে শুনতে। তাই এ রোগীকে সুস্থ করার জন্য ভালবাসার মানুষের শুদ্ধ আচরন সবথেকে বড় ওষুধ।
আমার ধারণা। 🙏🙏

কলমে:শ্রাবণী কর ।

Comments

Popular posts from this blog

অবৈধ

টেলিপ্যাথি

বিশ্বাসঘাতকের কাছে ম্যাসেজ......